রোগ বালাই

কোয়েলের রোগবালাই নেই বললেই চলে। সাধারণত কোনো ভ্যাকসিন অথবা কৃমিনাশক ঔষধ দেয়া হয় না। তবে বাচ্চা ফুটার প্রথম ২ সপ্তাহ বেশ সংকটপূর্ণ। এ সময় অত্যন্ত সতর্কতার সাথে কোয়েলের বাচ্চার যত্ন নিতে হয়। বাচ্চা অবস্থায় অব্যবস্থাপনার কারণে কোয়েলের বাচ্চা মারা যায়। তবে, বয়স্ক কোয়েলের মৃত্যুহার খুবই কম।

কোয়েল পালন উৎপাদনের দিক থেকে অধিক লাভজনক। অন্যান্য পোল্ট্রির তুলনায় কোয়েলের মাংস এবং ডিম গুণগতভাবে শ্রেষ্ঠ। কোয়েলের ডিমে কোলেস্টরলের পরিমাণ কম এবং আমিষ বেশি। একটি মুরগীর পরিবর্তে ৮ টি কোয়েল পালন করা যায়। অল্প জায়গায় বাংলাদেশের নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়ায় অল্প খরচে পারিবারিক পর্যায়ে অথবা বাণিজ্যিকভিত্তিতে কোয়েল পালন দেশে পুষ্টি ঘাটতি দূরীকরণে এবং জাতীয় আয় বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে।

ব্রুডার নিউমোনিয়া
আবহাওয়া পরিবর্তনের সাথে সাথে বাচ্চা কোয়েলের মৃত্যু হতে পারে, যদি না ব্রুডারে থাকাকালীন তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখা যায়৷ তাই ব্রুডিং করার সময় অর্থাত প্রথম দুই সপ্তাহ বাচ্চা কোয়েলকে নজরে রাখতে হবে৷ কারণ ঐ সময় আসপারজিলাস ফিউমিগেটাস নামক ছত্রাকের প্রভাবে এই ব্রুডার নিউমোনিয়া হয়৷

রোগের লক্ষণ
বাচ্চাপাখী ঝিমিয়ে পড়ে, দুর্বল হয়ে পড়ে, খাওয়া দাওয়াবন্ধ হয়ে যায়৷ জোরে জোরে নিশ্বাস নিতে থাকে৷ চোখ লাল হয়ে যায়, চোখ থেকে রস বেরোতে থাকে৷ এই রোগে মৃত্যুর হার শতকরা ২ - ৩ ভাগ৷ কিন্তু আক্রান্তের হার শতকরা ৫০ ভাগ৷

চিকিত্সা
২ গ্রাম ক্যালসিয়াম প্রোপিওনেট ১০০ কেজি খাবারের সাথে মেশাতে হবে৷ আন্টিবায়টিক খাওয়াতে হবে৷ পাশাপাশি প্রাণীচিকিত্সকের পরামর্শ নিতে হবে৷

কোয়েল ডিজিজ
কোয়েল ডিজিজের আর এক নাম আলসারেটিভ এনটারাইটিস৷ এটি কোয়েলের একটি গুরুত্বপূর্ণ রোগ৷

রোগের লক্ষণ
পাতলা পায়খানা, দুর্বল হয়ে পড়ে, খিচুনি হয়, ক্ষুদ্রান্ত্রে ও শিকামে ঘা হয়ে যায়৷

চিকিত্সা
আন্টিবায়টিক খাওয়াতে হবে৷ পাখী খুব বেশী মারা গেলে স্থানীয় চিকিত্সকের কাছে পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ খাওয়াতে হবে
এগ্রোবাংলা ডটকম৷

পুষ্টি

বাচ্চা, বাড়ন্ত অথবা প্রজনন কাজে ব্যবহৃত কোয়েলের স্ট্যান্ডার্ড রেশন বাজারে সহজলভ্য নয়। কোয়েলের রেশনকে তিনভাগে ভাগ করা যায়। যথাঃ স্টার্টার (০-৩ সপ্তাহ), বাড়ন্ত (৪-৫ সপ্তাহ) এবং লেয়ার বা ব্রিডার (৬ সপ্তাহ পর্যন্ত কোয়েলের প্রতিকেজি খাবারে ২৭% প্রোটিন এবং ২৮০০ কিলো ক্যালরী বিপাকীয় শক্তি)। বাড়ন্ত কোয়েলে প্রতি কেজি খাবারে ২৩% প্রোটিন এবং ২৭০০ কিলোক্যালোরী বিপাকীয় শক্তি এবং লেয়ার কোয়েলের প্রতিকেজি খাবারে ২২-২৪% প্রোটিন এবং ২৭০০ কিলোক্যালোরী বিপাকীয় শক্তিতে ভাল ফল পাওয়া যায়। ডিম পাড়া কোয়েলে প্রতি কেজি খাবারে ২.৫-৩.০% ক্যালসিয়াম থাকতে হবে। তবে গরমের সময় ডিমের উৎপাদন সঠিক রাখার জন্য ৩.৫% ক্যালসিয়াম এর প্রয়োজন হয়।

আলোক ব্যবস্থাপনা

কাঙ্খিত ডিম উৎপাদন এবং ডিমের উর্বরতা বৃদ্ধির জন্য দৈনিক ১৪-১৮ ঘন্টা আলো প্রদান করা প্রয়োজন। শরৎকাল এবং শীতকালে দিনের আলোক দৈর্ঘ্য কম থাকে তাই কৃত্রিম আলোর ব্যবস্থা করা হয় । পুং কোয়েল, যেগুলো প্রজনন কাজে এবং শুধুমাত্র মাংস উৎপাদনের জন্য ব্যবহার করা হয় সেগুলোর জন্য দৈনিক ৮ ঘন্টা আলোকই যথেষ্ট। প্রাকৃতিক আলোর সাথে কৃত্রিম আলোর সমন্বয় করে নিম্ন সারণী মোতাবেক আলো দিলে কাঙ্খিত ডিম উৎপাদন সম্ভব।

বয়স অনুযায়ী প্রয়োজনীয় আলোর ব্যবস্থাপনা

খাবার পাত্র ও পানির পাত্র

খাবার পাত্র
বাচ্চা অবস্থায় ফ্লাট ট্রে বা ছোট খাবার পাত্র দিতে হবে যেন খাবার খেতে কোনো রকম অসুবিধা না হয়। স্বাভাবিকভাবে প্রতি ২৮টি বাচ্চার জন্য একটি খাবার পাত্র (যার দৈর্ঘ্য ৫০৩ সেমি, প্রস্থ ৮ সেমি এবং উচ্চতা ৩ সেমি) এবং প্রতি ৩৪ টি বয়স্ক কোয়েলের জন্য একটি খাবার পাত্র (যার দৈর্ঘ্য ৫৭ সেমি প্রস্থ ১০ সেমি এবং উচ্চতা ৪ সেমি) ব্যবহার করা যেতে পারে। দিনে দুইবার বিশেষ করে সকালে এবং বিকালে খাবার পাত্র ভাল করে পরিষ্কার করে মাথা পিছু দৈনিক ২০-২৫ গ্রাম খাবার দিতে হবে। উল্লেখ্য প্রথম সপ্তাহ থেকে ৫ গ্রাম দিয়ে শুরু করে প্রতি সপ্তাহে ৫ গ্রাম করে বাড়িয়ে ২০-২৫ গ্রাম পর্যন্ত উঠিয়ে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। প্রতিটি বয়স্ক কোয়েলের জন্য ১.২৫ থেকে ২.৫ সেমি (১/২ থেকে ১ ইঞ্চি) খাবার পাত্রের জায়গা দিতে হবে।

পানির পাত্র
সর্বদাই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পানি সরবরাহ করতে হবে। প্রতিটি বয়স্ক কোয়েলের জন্য ০.৬ সেমি (১/৪ ইঞ্চি) পানির পাত্রের জায়গা দিতে হবে। অটোমেটিক বা স্বাভাবিক যে কোনো রকম পানির পাত্র ব্যবহার করা যেতে পারে। প্রতি ৫০টি কোয়েলের জন্য একটি পানির পাত্র দেয়া উচিত। নিপল ড্রিংকার বা কাপ ড্রিংকারও ব্যবহার করা যায়। এ ক্ষেত্রে প্রতি ৫টি বয়স্ক কোয়েলের জন্য ১টি নিপল বা কাপ ড্রিংকার ব্যবহার করা যেতে পারে।

কোয়েলের বাচ্চার ব্রুডিং ব্যবস্থাপনা এবং যত্ন

সদ্য ফুটন্ত কোয়েলের বাচ্চা খুবই ছোট থাকে। এক দিন বয়সের কোয়েলের বাচ্চার ওজন মাত্র ৫-৭ গ্রাম থাকে। তাই ঠান্ডা বা গরম কোনটাই তারা সহ্য করতে পারে না। এমতাবস্থায় কাঙ্খিত তাপমাত্রা এবং খাদ্যে প্রয়োজনীয় পুষ্টিমান অত্যন্ত সতর্কতার সাথে বজায় রাখতে হবে। এ সময় কোন রকম ত্রুটিপূর্ণ ব্যবস্থাপনা বা কোন রকম ধকল হলে এর বিরূপ প্রভাব দৈহিক বৃদ্ধি, ডিম উৎপাদন এবং জীবনি শক্তির থাকার উপর পড়ে। বাচ্চাকে তাপ দেয়া বা ব্রুডিং সাধারণত দুই পদ্ধতিতে করা যায়। যেমনঃ খাঁচায় বা কেইজে ব্রুডিং এবং মেঝেতে ব্রুডিং। যে পদ্ধতিতেই তাপ দেয়া হোক না কেন তাপমাত্রার প্রয়োজনীয়তা একই রকম। প্রথম সপ্তাহে সাধারণত ৩৫০সে তাপমাত্রা দিয়ে ব্রুডিং আরম্ভ করা হয় এবং এই তাপমাত্রা প্রতি সপ্তাহে পর্যায়ক্রমে ৩.৫০সে কমিয়ে নিম্নলিখিত মাত্রায় আনতে হবে।
উপরে যে তাপের উল্লেখ করা হলো তা হলো ব্রুডারের তাপমাত্রা। থার্মোমিটারের সাহায্যে সরাসরি এই তাপমাত্রা নিরূপণ করা যায়। তবে থার্মোমিটার ছাড়াও ব্রুডারের তাপ সঠিক হয়েছে কি না তা ব্রুডারের বাচ্চার অবস্থান দেখে বুঝা যায়। বাচ্চারা যদি বাল্বের কাছে জড়োসড়ো অবস্থায় থাকে তবে বুঝতে হবে তাপমাত্রা কম হয়েছে। আর যদি বাল্ব থেকে দূরে গিয়ে থাকে তবে বুঝতে হবে তাপমাত্রা অধিক। অন্যদিকে বাচ্চাগুলো যদি চারিদিকে সমভাবে ছড়িয়ে থাকে এবং স্বাভাবিক ঘুরাফেরাসহ খাদ্য পানি গ্রহণ করতে থাকে তবে বুঝতে হবে পরিমিত তাপমাত্রা আছে। বাংলাদেশে গরমের সময় দুই সপ্তাহ এবং শীতের সময় তিন চার সপ্তাহ কৃত্রিম উপায়ে তাপ দিতে হয়। গবেষণা থেকে জানা যায় যে, দুই সপ্তাহ কেজে ব্রুডিং করে পরবর্তীতে মেঝেতে পালন করলে মৃত্যু হার অনেক কম হয় এবং বাচ্চার ওজন অপেক্ষাকৃত বেশি হয়। কোয়েলের মৃত্যুহার নির্ভর করে এদের উপযুক্ত ব্যবস্থাপনার উপর। ব্রুডিংকালীন পর্যাপ্ত তাপ প্রদান করতে না পারলে বাচ্চার মৃত্যুহার নাটকীয়ভাবে বেড়ে যায়। কাজেই এ সময়ে বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া দরকার। আর বয়স্ক কোয়েলের মৃতু্যহার তুলনামূলকভাবে খুব কম।
ইনকুবেটরে বাচ্চা ফোটার ২৪ ঘন্টার মধ্যে ব্রুডিং ঘরে এনে প্রথমে গ্লুকোজ মিশ্রিত পানি এবং পরে খাদ্য দিতে হবে। খাদ্যের সাথে সাথে পর পর তিনদিন গ্লুকোজ পানি পান করতে দেয়া ভাল। তারপর এমবাভিট ডবি্লও এস পানির সঙ্গে তিন দিন সরবরাহ করতে হবে। প্রথম সপ্তাহ খবরের কাগজ বিছিয়ে তার উপর খাবার ছিটিয়ে দিতে হবে এবং প্রতিদিন খবরের কাগজ পরিবর্তন করতে হবে। এক সপ্তাহ পর ছোট খাবার পাত্র বা ফ্লাট ট্রে ব্যবহার করা যেতে পারে। পানির পাত্রে বাচ্চা যাতে পড়ে না যায় সেজন্য মার্বেল অথবা কয়েক টুকরা পাথর খন্ড পানির পাত্রে রাখতে হবে। সর্বদাই পরিষ্কার-পরিচছন্ন পানি সরবরাহ করতে হবে।
অন্যান্য পোল্ট্রির মত কোয়েলের জীবন চক্রকে তিনভাগে ভাগ করা যায়। যেমনঃ বাচ্চা, বাড়ন্ত এবং বয়স্ক। অনেকে আবার কোয়েলের জীবনচক্র সংক্ষিপ্ত বিধায় তাকে শুধু বাচ্চা এবং বয়স্ক এই দুইভাগে ভাগ করেন। স্বাভাবিকভাবে ১-৩ সপ্তাহ বয়স পর্যন্ত বাচ্চা বলা হয়। ৩-৫ সপ্তাহ বয়সের কোয়েলকে বাড়ন্ত এবং ৫ সপ্তাহের অধিক বয়সের কোয়েলকে বয়স্ক বলে। অধিকতর সহজ ব্যবস্থাপনার জন্য এই অধ্যায়ের কোয়েলের জীবন চক্রকে দুই ভাগে যেমনঃ ১-৩ সপ্তাহ পর্যন্ত বাচ্চা এবং তিন সপ্তাহের বেশি বয়েসের কোয়েলকে বয়স্ক কোয়েল বলে অভিহিত করা হয়েছে।

কোয়েলের বাচ্চা ফোটানো

স্বাভাবিক নিয়মে ১৭-১৮ দিনে উপযুক্ত পরিবেশে ডিম হতে বাচ্চা ফুটে। অবশ্য তা প্রজাতি বা ইনকিউবেশন পদ্ধতির উপরও নির্ভর করে। বাণিজ্যিক কোয়েল ডিমে তা দেয় না। ফলে এদের দিয়ে বাচ্চা ফোটানো সম্ভব নয়। কোয়েলের ডিম সাধারণত কৃত্রিম উপায়ে ইনকুবেটর দিয়ে ফোটানো হয়। সফলভাবে বাচ্চা ফোটানোর হার বেশি পেতে হলে ইনকিউবেটর নির্মাতার নির্দেশ সতর্কতার সাথে পালন করতে হবে। ইনকুবেটরের কিছু কিছু মডেল শুধুমাত্র কোয়েলের ডিম বসানোর জন্যই ডিজাইন করা হয়। জাপানীজ কোয়েলের ডিম মুরগীর ডিম ফোটানোর জন্য ব্যবহৃত ইনকুবেটরে ফোটানো যেতে পারে তবে ডিম বসানোর ট্রেগুলোতে কিছুটা পরিবর্তন আনা দরকার। ডিমের মোটা অংশ সেটিং ট্রেতে বসানো উচিত। নিয়মমাফিক কোয়েলের ডিম প্রথম ১৫ দিন সেটিং ট্রেতে এবং পরবর্তী ৩ দিন হ্যাচিং ট্রেতে দিতে হবে। তাপমাত্রা ৯৮-১০১০ ফা এবং প্রথম ১৫ দিন ৫০-৬০% আর্দ্রতা এবং পরবর্তীতে ৬০-৭০% আর্দ্রতা রাখা বাঞ্ছনীয় (ইনকুবেটর নির্মাতার নির্দেশ অনুসারে)। প্রতি ২ থেকে ৪ ঘন্টা অন্তর ডিম ঘুরিয়ে (টার্নিং) দিতে হবে যাতে ভ্রূণ খোসার সাথে লেগে না যায়। ১৫তম দিনে ডিম সেটিং ট্রে থেকে হ্যাচিং ট্রেতে স্থানান্তর করতে হবে এবং ডিম ঘুরানো বন্ধ করতে হবে। ডিম থেকে বের হওয়া বাচ্চা ২৪-২৮ ঘন্টার মধ্যে ব্রুডার ঘরে স্থানান্তর করতে হবে।

ডিমের রং, আকার ও আকৃতি

শুধুমাত্র কিছু প্রজাতির কোয়েল সাদা রংয়ের ডিম পাড়ে। তাছাড়া বেশির ভাগ কোয়েলের ডিম বাদামী এবং গায়ে ফোঁটা ফোঁটা দাগ আছে।
ইনকিউবেটরে বসানোর পূর্বে ডিমের যত্ন :
দিনে অন্তত দু'বার ফোটানোর ডিম সংগ্রহ করতে হবে এবং ১৫.৫০ সে তাপমাত্রায় ৮০% আর্দ্রতায় ৭-১০ দিন সংরক্ষণের জন্য ২০ মিনিট ফরমালডিহাইড গ্যাসে রাখতে হবে। কোয়েলের ডিমের খোসা ভাঙ্গার প্রবণতা বেশি থাকায় ডিম অত্যন্ত সাবধানে নাড়াচাড়া করতে হয়। ডিম দূষিত হওয়ার প্রধান উৎস এবং রোগ বিস্তারের মুখ্য কারণ হচ্ছে ময়লাযুক্ত ইনকিউবেটর অথবা হ্যাচারী এলাকা প্রতিবার ব্যবহারের পর প্রতিটি হ্যাচিং ইউনিট ভালভাবে ধৌত করে জীবাণুমুক্ত করতে হবে। বাজারে যে সমস্ত উন্নতমানের জীবাণুনাশক পাওয়া যায় সেগুলো ব্যবহার করে জীবাণুমুক্ত করা যেতে পারে। ময়লাযুক্ত ডিম রোগ ও জীবাণুর প্রধান উৎস। কাজেই সর্বদা পরিষ্কার-পরিচছন্ন ডিম বসাতে হবে। বাচ্চা ফুটানোর ডিম কখনও ধোয়া উচিত নয়। ডিম সংগ্রহ করার পর ডিম ফিউমিগেশন করা উচিত অথবা বিকল্প ইনকিউবেটরে ডিম বসানোর ১২ ঘন্টার মধ্যে ফিউমিগেশন করা উচিত।

পুনরুৎপাদন

কোয়েলের বয়স ১০-২০ সপ্তাহ হলেই তারা বছরের প্রায় সকল ঋতুতেই পুনরুৎপাদন করে থাকে। স্ত্রী কোয়েল যেন একটি মেশিন, প্রতি ১৬ থেকে ২৪ ঘন্টায় ১টা করে ডিম পাড়ে এবং ৮-১২ মাস পর্যন্ত ডিম পাড়া অব্যাহত থাকে। শুধুমাত্র ডিম ফুটাতে চাইলে স্ত্রী কোয়েল প্রতিপালন অধিক লাভজনক। ডিমের উর্বরতা আশানুরূপ পেতে হলে ২:১, ৫:২ বা ৩:১ অনুপাতে স্ত্রী এবং পুরুষ কোয়েল একত্রে রাখতে হবে। তবে অর্থনৈতিক দিক দিক বিবেচনা করে ৩:১ অনুপাত অপেক্ষাকৃত ভাল । স্ত্রী কোয়েলের সাথে পুরুষ কোয়েল রাখায় ৪ দিন পর থেকে বাচ্চা ফুটানোর জন্য ডিম সংগ্রহ করা উচিত এবং স্ত্রী কোয়েল থেকে পুরুষ কোয়েল আলাদা/পৃথক করার পর তৃতীয় দিন পর্যন্ত ফুটানোর ডিম সংগ্রহ করা যেতে পারে।
স্বাভাবিক ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশের আবহাওয়ায় কোয়েল ৬-৭ সপ্তাহ বয়সে ডিম পাড়া শুরু করে। ৮-১০ সপ্তাহ বয়সে ৫০% ডিম পাড়ে এবং ১২ সপ্তাহের পর থেকে ৮০% ডিম পাড়ে। উপযুক্ত পরিবেশে প্রথম বছর গড়ে ২০০-২৫০টি ডিম পাড়ে। দ্বিতীয় বছরে ডিমের উৎপাদন প্রথম বছরের উৎপাদনের শতকরা ৪৮ ভাগ হয়। কোয়েলের ডিমের উর্বরতা স্বাভাবিক অবস্থায় শতকরা ৮২-৮৭ ভাগ। তবে কোয়েলের ডিমের ফার্টিলিটি এবং হ্যাচ্যাবিলিটি পরিবর্তনশীল অথার্ৎ ফার্টিলিটি এবং হ্যাচিবিলিটি কম বেশি হতে পারে। ডিমপাড়া শুরুর প্রথম দুই সপ্তাহের ডিম ফোটানো উচিত নয়। ৫০ সপ্তাহের অধিক বয়সের কোয়েলের ডিমের উর্বরতা এবং ফোটার হার কম। কোয়েলের ডিমের গড় ওজন ১০-১২ গ্রাম এবং গড়ে সারা বছর শতকরা ৬০ ভাগ ডিম দেয়। ডিমের ওজন স্ত্রী কোয়েলের দৈহিক ওজনের ৮%। কোয়েল এক বাণিজ্যিক বছরের অধিককাল পালন করা উচিত নয় কারণ তখন ডিম উৎপাদন খুবই কমে যায়। আন্তঃপ্রজনন যাতে না হয় সেজন্য নিকট সমপর্কযুক্ত কোয়েলের মধ্যে প্রজনন করানো যাবে না।

কোয়েলের স্বাস্থ্য রক্ষা

ককুতরের মতো কোয়েলেরও তেমন কোন রোগ ব্যাধি নেই বললেই চলে। তবে মাঝে মাঝে কোয়েলকে রোগক্রান্ত হতে ধেখা যায়। কোয়েল রোগাক্রান্ত হলে সাথে সাথে ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।

কোন কোয়েল অসুস্থ হলে সাথে সাথে তাকে সুস্থ কোয়েলের খাঁচা থেকে সরিয়ে নিতে হবে। অসুস্থ্য কোয়েলের সংস্পর্শে থাকলে বাকি সুস্থ কোয়েলও আক্রান্ত হতে পারে।

খাঁচায় কোন কোয়েল মারা গেলে সাথে সাথে তার কারণ অসুসন্ধান করতে হবে। মরা কোয়েল পুড়িয়ে বা পুতে পেলতে হবে।

কোয়েলের বিভিন্ন রোগ ব্যাধির মধ্যে আমাশয় উল্লেখ্যযোগ্য। এই রোগ হলে কোয়েলের ঘন ঘন পায়খানা হয়, খাবার গ্রহনে অনীহা দেখা দেয় পাশাপাশি কোয়েলের স্বাস্থ্য খারাপ হতে থাকে। এই অবস্থায় ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী এম্বাজিন জাতীয় ঔষধ খাওয়ানো যেতে পারে।

তবে সবচেয়ে বড়ো কথা, সুষ্ঠুভাবে কোয়েল পালন করতে হলে তাদের থাকার জায়গা বা বাসস্থান, খাবার জায়গা ইত্যাদি স্থানগুলো শুকনা এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। পর্যাপ্তআরৌ বাতাসের ব্যবস্থা থাকতে হবে। সেই সাথে প্রয়োজনীয় সুষমত খাদ্যের সরবরাহ রাখতে হবে। তবেই কোয়েল পালন করে তার মাংস ও ডিম উৎপাদনে সঠিক ভূমিকা রাখা সম্ভব হবে।
লেখক: আবদুল্লাহ আল মামুন, উপ-পরিচালক, বংলাদেশ কৃষি গবেষনা ইনস্টিটিউট।

কোয়েলের খাদ্য বা খাবার ব্যবস্থা

কোয়েল পালনে তেমন খরচ নেই এই কারণেই বলা হয়ে থাকে যে, কোয়েলের জন্য আলাদা তেমন কোন সুষম খাদ্যের প্রয়োজন হয় না। শুধুমাত্র ডিম থেকে বাচ্চা ফুটে বের হবার পর কিছুটা বিশেষ যত্ন প্রয়োজন হয়। এইসময় কোয়েলের বাচ্চাকে সুষম খাদ্য প্রদান করতে হয়।

সাধারণভাবে একটি পূর্ণাঙ্গ বয়সের কোয়েল দিনে ২০ থেকে ২৫ গ্রাম পর্যন্ত খাবার গ্রহণ করতে পারে। এদের খাদ্যে আমিষ ও ক্যালোরির পরিমাণ নিম্নোক্ত হওয়া উচিত। সাধারণভাবে প্রতি কেজি খাদ্য অনুপাতে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ আমিষ এবং ২৫০০ থেকে ৩০০০ কিলোক্যালোরি বিপাকীয় শক্তি বিদ্যমান থাকা প্রয়োজন। সাধারণভাবে হাস মুরগির যে খাবার সরবরাহ করা হয়ে থাকে তার মধ্যেই এই ধরনের আমিষ এবং ক্যালোরি বিদ্যমান। সুতরাং হাস মুরগির জন্য যে খাবার আনা হয় তার থেকেও খাবার প্রদান করে কোয়েল পালন করা যায়।

মুরগির খামারে ব্যবহৃত আকারে একটু ছোট হলে ভাল হয়। তবে কোয়েল খুব ঘন ঘন পানি পান করে। তাই কোয়েলের খাচায় কয়েকটি স্থানে পানির ব্যবস্তা খাকতে হবে। তবে লক্ষ্য রাখতে হবে পানির পাত্রগুলো যেন খাঁচার সাথে শক্ত করে আটকানো থাকে। যাতে পানির পাত্র উপচে বা উল্টে পড়ে কোয়েলের গা ভিজে না যায়।

কোয়েলের থাকার জায়গা বা বাসস্থান

কোয়েলের থাকার জন্য হাঁস মুরগির মতো বিশেষ কোন ব্যবস্থা নিতে হয় না। তবে অন্য সব গৃহপালিত পশু পাখির মতো তাদের বাস্থান যাতে পর্যাপ্ত আলো বাতাসের মধ্যে থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখা বিশেষ প্রয়োজন।

লিটার বা খাঁচায় কোয়েল পালন করা সবচেয়ে যুক্তিযুক্ত। একটি খাঁচার ওপর আরেকটি খাচা এভাবে মোটামুটিভাবে অল্প জায়গাতে অনেকগুলো খাচা স্থাপন করে কোয়েল পালন করা যায়। মোটামুটিভাবে ১৩০ থেকে ১৫০ সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্য, ৬০ থেকে ১০০ সিন্টিমিটার প্রস্থ এবং ২৫ থেকে ৪০ সেন্টিমিটার উচ্চতা বিশিষ্ট একটি খাচায় কমপক্ষে ৬০ থেকে ১০০টি কোয়েল পালন করা যায়। তবে কোয়েলের খাচায় ব্যবহৃত জালের ফাকগুলো একটু ঘন হতে হবে। যাতে করে কোয়েলের মুখ বা গলা সেই ফাক দিয়ে বাইরে বেরিয়ে না আসে। সর্বোপরি বাচ্চা রাখার খাচাসহ পরিনত বয়সের কোয়েলের খাঁচাগুলোতে যেন ইদুর, ছুচো ইত্যাদি না ঢুকতে পারে-সেদিকে লক্ষ্য রেখে খাঁচার ফাঁক তৈরি করতে হবে।
কোয়েলের জন্য খাবার এবং পানির সুব্যবস্থা তার খাঁচাতেই রাখতে হবে। তবে লক্ষ্য রাখতে হবে-পানি খাবার বা রাখার পাত্র উল্টে যেন কোয়েলের গা ভিজে না যায়।

ঘরের যেখানে পর্যাপ্ত আরো বাতাসের ব্যবস্থা রয়েছে-সেখানে কোয়েলের খাঁচা রাখা যেতে পারে । তবে লক্ষ্য রাখতে হবে-বৃষ্টির পানি বা অন্য কোন তরলপদার্থ দ্বারা কোয়েলের খাঁচা ভিজে না যায়। ভেজা স্থান কোয়েলের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্নক হুমকিস্বরূপ । খাবার পাত্র এবং পানি রাখার পাত্রগুলো মুরগির খামারের মতোই হবে-তবে সেগুলো আকারে ছোট হলেও অসুবিধা নেই।

কোয়েলের বাচ্চা পালনের সময় একটি অতিরিক্ত যত্নের প্রয়োজন হয়। এই সময় বাচ্চাকে ব্রুডিং এর ব্যবস্থা করতে হয়। বাচ্চার বয়স ১৪ থেকে ২১ দিন পর্যন্ত কৃত্রিম উত্তাপের মাধ্যমে এই ব্রুডিং এর ব্যবস্থা করতে হয়। কারণ, ডিম থেকে ফোটার পর বাচ্চা উক্ত সময় পর্যন্ত খুবই স্পর্শকাতর এবং দুর্বল থাকে। এই সময় তাদেরকে প্রয়োজনীয় ক্যালোরিযুক্ত খাবারও প্রদান করতে হয়। তা না হলে সদ্যজাত বাচ্চা ক্যালোরির অভাবে শরীর ঠান্ডা হয়ে মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়তে পারে।

সাধারণভাবে বাচ্চা ফুটলে সেগুলোকে আলাদা খাঁচায় স্থানান্তর করা উচিত। কারণ, তাহেল বাচ্চার জন্য প্রয়োজনীয় ব্রুডিং এর ব্যবস্থা করা সম্ভবপর হয়ে থাকে। মুরগির বাচ্চার মতো একই পদ্ধতিতে কোয়েলের বাচ্চাকে ব্রুডিং বা কৃত্রিম তাপ প্রদান করার প্রয়োজন হয়ে থাকে। বড়ো আকারের কোয়েলের খামারে বাচ্চা রাখার জন্য আলাদা ব্রুডার খাঁচা তৈরি করা হয়ে থাকে। যাতে করে বাচ্চা ডিম ফুটে বের হবার প্রায় সাথে সাথে সেই খাঁচায় বাচ্চা স্থানান্তর করা যায়।

মোটামুটিভাবে কোয়েল পালনের জন্য এই ধরণের বাড়তি যত্ন আর বাসস্থান প্রয়োজন হয়। তবে হিসেব করে দেখা গেছে ১০০টি মুরগির জন্য যে ধরনের ব্যাপক বাসস্থানের প্রয়োজন হয়-সেই ধরনের জায়গায় কমপক্ষে ১০০০ থেকে ১২০০ কোয়েল পালন করা সম্ভবপর হয়ে থাকে।

কোয়েলের জাত বা বংশ

কোয়েলের জাত হিসেবে প্রথমেই উল্লেখ করতে হয় জাপানি কোয়েলকে। কারণ, জাপানেই কোয়েলক সর্বপ্রথম গৃহপালিত করা হয়েচে। জাপানের হিসেবে অনুযায়ী কোয়েলের কয়েকটি জাত এবং উপাজত রয়েছে, সেগুলো নিম্নরূপ-

লেয়ার কোয়েলঃ মুরগির মতো কোয়েলের মধ্যেও লেয়ার জাত বিদ্যমান। এই জাতের উল্লেখযোগ্য গোষ্টি হলো-ফারাও, ইংলিশ হোয়াই, ম্যানচিরিয়াল গোল্ডেন, ব্রিটিশ রেঞ্জ ইত্যাদি। এই জাতের কোয়েলকে শুধু ডিম প্রদানের জন্য পালন করা হয়ে থাকে।

ব্রয়লার কোয়েলঃ মুরগির মতো কোয়েলের মধ্যে ব্রয়লার জাত বিদ্যমান এই জাতের উল্লেখযোগ্য গোষ্টি হলো আমেরিকান বব হোয়াইট কোয়েলে ইন্ডিয়ান হোয়াইট ব্রেস্টেড কোয়েল ইদ্যাদি। এই জাতের কায়েলকে শুধু মাংসের জন্য পালন করা হয়ে থাকে।

একটি পূর্ণবয়স্ক কোয়েল সর্বোচ্চ ৪ বছর বেচে থাকে। এই বয়সের মধ্যে সে অন্ততপক্ষে ৮০০ থেকে ১২০০ ডিম প্রদান করে থাকে। একটি পূর্ণাঙ্গ কোয়েলের ওজন ১৫০ থেকে ২৫০ গ্রাম পর্যন্ত হতে পারে। ডিমের ওজন হয়ে থাকে ৮ থেকে ১২ গ্রাম। কোয়েলের ডিম দেখতে খুব সুন্দর কারুকার্যখচিত বলে মনে হয়। এরেদ ডিমের খোসার ওপর নীল, বেগুনী, খয়েরি এবং কালো রঙ্গের ছোট ছোট পোটা বা ছিট ছিট দাগ থাকে। অনেকে এই দাগের জন্য এই ডিমগুলো খাওয়ার প্রতি অনীহা প্রকাশ করে থাকেন। কোয়েলের প্রতিটি ডিমই আসলে ভবিষ্যতের পূর্ণাঙ্গ বাচ্চা। অর্থাৎ প্রতিটি ডিম থেকেই একটি বাচ্চা ফুটতে পারে। তবে বাচ্চাপ ফোটার জন্য ডিম তৈরি করতে হলে একটি পুরষ কোয়েলের সাথে তিনটি স্ত্রী কোয়েলকে কিছুদিন একসাথে রাখতে হবে। কোয়েলের ডিম থেকে বাচ্চা ফোটানোর জন্য ইনকিউবেটর ব্যবহার কা হয়। তবে যাদের ইনকিউবেটরন নেই তারা সাধালনত কুচ্ছে মুরগির পেটের তলে দিয়ে বাচ্চা ফুটিয়ে থাকেন। কারণ কার্যত কোয়েল পাখি কখনও কুঁচ্চে হয় না। ফলে কোয়েলের ডিম থেকে বাচ্চা ফোটাতে কুঁচ্চে মুরগির কিংবা ইনকিউবেটরের সহায়তা নিতে হয়।

ডিম থেকে বাচ্চা ফুটতে ১৭ থেকে ১৮ দিন পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। তবে বাচ্চা ফোটার পরই সেগুলো পরিবেশের সাথে সরাসরি মানিয়ে নিতে পারে না। কারণ, কোয়েলের বাচ্চা খবই সংবেদনশীল। এরা পরিবেশের সাথে মানিয়ে নিতে কমপক্ষে ১০ থেকে ১৪ দিন পর্যন্ত সময় নেয়। এই সময়টাতে বাচ্চার প্রতি বিশেষ যত্নবান হতে হয়। এইসময় বাচ্চাকে কোয়েলের সাধারণ খাচা থেকে সরিয়ে ব্রুডিং ঘরে নিয়ে যাওয়া ভাল। কারণ, সেই সময় বাহ্যিক উত্তাপ প্রয়োজন হয় বাচ্চার। ব্রুডিং পদ্ধতিতে বাচ্চার শরীর সেই সময় গরম করতে হয়।

কোয়েল পালনের বিভিন্ন সুবিধা সমূহ

কোয়েল পালন করলে অসুবিধার চেয়ে সুবিধার পরিমাণ বেশি। পরবর্তীতে কোয়েল পালনের বিভিন্ন সুবিধাসমূহ উল্লেখ করা হলো।

(১) সাধারণত একটি ভাল জাতের কোয়েল বছরে ২৫০ থেকে ৩০০টি ডিম প্রদানে সক্ষম হয়ে থাকে। এই ডিমগুলোর প্রায় প্রতিটি থেকেই বাচ্চা পাওয়া যায়। এই বাচ্চা পরবর্তীর ৬ থেকে ৭ সপ্তাহের মধ্যেই খাওয়া বা বিক্রির উপযোগী হয়। পাশাপাশি এই বয়সে তারা ডিম দেয়া শুরু করতে পারে।

(২) অত্যন্ত কম পুজি নিয়ে কোয়েলের খামার তৈরি করা যায়। কোয়েল পালন করতে বিশেষ কোন জায়গা বা বিশেষ কোন থাকার স্থান নির্বাচন করতে হয় না।

(৩) কোয়েলের আকার ক্ষুদ্র বলে এদের লালন পালনের জন্য বিস্তৃত জায়গা প্রয়োজন হয় না। ছোট আকারের একটি খাচাতেই কোয়েল পালন করা যায়। একটি প্রমাণ সাইজের মুরগির জন্য যে পরিমাণ জায়গা প্রয়োজন হয়। সেই একই জায়গা কমপক্ষে ১২টি কোয়েল পালন করা যায়।

(৪) রোগ ব্যাধির দিকে থেকে কোয়েল খুবই লাভজনক বিনিয়োগ। কারণ, কোয়েলের রোগ ব্যাধি প্রায় হয় না বললেই চলে। যেহেতু কোয়েলের রোগ ব্যাধি কম হয় সুতরাং এদের জন্য বাড়তি চিকিৎসা ব্যবস্থার তেমন প্রয়োজন হয় না।

(৫) খুবই অল্প সময়ের মধ্যে একটি বাচ্চা কোয়েল ডিম দিয়ে থাকে। সাধারণত ৬ থেকে ৭ সপ্তাহ বয়সেই একটি কোয়েল ডিম প্রদান করে থাকে। এদের ডিম খুব সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। পুষ্টিমানের দিক থেকে মুরগির ডিমের সাথে তা তুলনীয়।

(৬) কোয়েলের জন্য বিশেষ কোন খাবার সরবরাহ করতে হয় না। এদের খাদ্য চাহিদা কম অথচ, শারীরিক বাড় খুব বেশি। এরা খুব দ্রুত বাড়তে পারে। দিনে ২০ থেকে ৩০ গ্রাম খাবার দিলেই এরা এদের শারীরিক ঘাটতি পুষিয়ে নিতে পারে।

(৭) একটি পরিণত বয়সের কোয়েল বছরে ২৫০ থেকে ৩০০টি ডিম প্রদান করতে পারে। সেই হিসেবে একটি কোয়েলের পেছনে যে টাকা বিনিয়োগ করা হয় সেই টাকা অল্প কিছুদিনের মধ্যেই লাভসহ ফেরত পাওয়া যায়।

(৮) কোয়েলের ডিম থেকে সর্বোচ্চ ২০ দিনের মধ্যেই বাচ্চা ফুটে বের হয়। এই বাচ্চা পরিণত কোয়েলে রূপান্তরিত হতে সময় লাগে ৬ থেকে ৭ সপ্তাহ।

(৯) কোযেলের মাংসে চর্বির পরিমাণ খুব কম বলে যে কোন রোগীর পথ্য হিসেবে কোয়েলের মাংস ব্যবহৃত হতে পারে। কোয়েলের ডিম পর্যাপ্ত পুষ্টির চাহিদাও মেটাতে পারে। এই কারনে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে কোয়েল পালন অত্যন্ত লাভজনক পদ্বতি।

কোয়েল ফার্ম: ভুমিকা

কোয়েলের আদি জন্মস্থান জাপানে। সর্বপ্রথম জাপানী বিজ্ঞানীরা কোয়েলকে গৃহপালিত পাখি হিসেবে পোষ মানানোর উপায় উদ্ভাবন করেছেন। পরবর্তীতে জাপান সহ পৃথিবীর অন্যান্য দেশে কোয়েলকে একটি লাভজনক পোলট্টি উপাদান হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। কোয়েল পালন করার জন্য অতিরিক্ত বা বাহুল্য কোন খরচ হয় না। কোয়েলকে সহজেই পোষ মানানো যায়। বাড়ির যেকোন কোণ বা আঙিনা অথবা বাড়ির ছাদ ইত্যাদি জায়গাতেও কোয়েল পালন করা যায়। এই কারণে, শহরে কী গ্রামে অনেক স্থানেই কোয়েল পালন ব্যাপক ও সহজতর হয়েছে। গৃহপালিত পাখির মধ্যে অতি ক্ষুদ্র এই পাখির আয়তন খুব বেশি নয়। একটি মুরগি পালনের স্থানে মোটামুটিভাবে ১০টি কোয়েল পালন করা যায়।

বিষেজ্ঞদের দ্বারা প্রমাণিত হয়েছে বাংলাদেশের আবহাওয়া কোয়েল পালনের জন্য সর্বাধিক উপযোগি। এই কারণে, বিভিন্ন হাস মুরগির খামারেও ইদানিং কোয়েল পালন ব্যাপকভাবে সাড়া জাগিয়েছে। দেশের পুষ্টি মিটিয়ে ইদানিং কোয়েলের মাংস বিদেশেও রপ্তানী হচ্ছে।

কোয়েলের মাংস ও ডিম খুবই সুস্বাদু। এদের মাংস ও ডিমে পর্যাপ্ত পরিমাণ আমিষ, প্রোটিন ও স্নেজাতীয় পদার্থ বিদ্যমান। বিশেষ করে কোয়েলের একটি ক্ষুদ্র ডিমে যে পরিমাণ প্রেটিন রয়েছে একটি বড়ো আকারের মুরগির ডিমেও প্রায় সেই পরিমাণ প্রোটিন বিদ্যান । অথচ, দামের দিক থেকে একটি মুরগির ডিমের বিনিময়ে চারটি কোয়েলের ডিম পাওয়া যায়। এই কারণে, আমাদের মতো গরীব দেশের নিজস্ব পুষ্টির চাহিদা মেটাতে কোয়েল উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারে।
আমাদের বাংলাদেশে কোয়েল পাখি এখনও নবাগত সম্প্রদায়ের তালিকায় পড়ে। তাই এই পাখি সম্পর্কে একটা অন্যরকম ধারনা আমাদের মধ্যে বিদ্যমান। আমরা অনেকেই কোয়েলের ডিম এবং মাংসের পুষ্টিকর দিকগুলো সম্পর্কে জানি না। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সাদা কালোর ফুটকি দেয়া ডিম এবং একই রঙ্গের পাখি সম্পর্কে আমাদের অনেক ভূল ধারণা রয়েছে। অনেকে ছোট ডিম বলে এগুলোকে কচ্ছপের ডিমের সাথে তুলনা করে থাকেন। ফলে এগুলো খেতে তাদের রুচি হয় না। কিন্তু বিষয়টা সম্পূর্ণ ভিন্ন। পার্থক্যগত দিক বিবেচনা করলে একটি কোয়েলের ডিমে সমপরিমাণ একটি মুরগির ডিমের মতো পুষ্টিমান বিদ্যামন। তবে আশার কথা, আমাদের দেশের কিছু কিছু অঞ্চলে ইদানিং কোয়েল পালনে উৎসাহী হয়ে উঠেছেন অনেকেই। ঢাকা শহরের বঙ্গবাজার এলাকার পোল্ট্রি মার্কেটে কোয়েলের ডিম, বাচ্চা এবং পরিণত বয়সের কোয়েল কিনতে পাওয়া যায়। এখান থেকে এগুলো সংগ্রহ করে ভাড়া বাসায় স্বল্প পরিসরেও কোয়েল পালন করা সম্ভব।

ইদানিং আমাদের দেশের বিভিন্ অঞ্চলে হাঁস মুরগির খামারের পাশাপাশি কোয়েলের খামার তৈরী হয়েছে এবং প্রতিদিন হচ্ছে। অনেকে হাস মুরগির খামার না করেও শুধু কোয়েলের খামার করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। এর মাংস এবং ডিম বিদেশে রপ্তানী করে অধিক মুনাফা অর্জন করা সম্ভব।

কোয়েল ফার্ম

বাংলাদেশে পেশাগত বিষয়ে নতুন নতুন অনেকগুলো পেশা বের হয়েছে তাদের মধ্যে কোয়েল পালন একটি নান্দনিক পেশা। এ পেশায় ঝুঁকি যেমন রয়েছে কম তেমনি লাভও রয়েছে বেশি। তবে দেশে চাহিদার চেয়ে কোয়েল পালনে ব্যবসায়ীর সংখ্যা কম। আবার এ ব্যবসায় যারা জড়িত রয়েছে তারা অধিকাংশই শখের বসত কোয়েল পালন করে থাকে। তবে বর্তমান অনেক স্বপ্ন পুঁজির ব্যবসায়ী কোয়েল পালন পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন তার সংখ্যা অপ্রতুল: দেশে যে হারে কোয়েল চাহিদা বেড়েছে সে হারে ব্যবসায়ীর সংখ্যা বাড়েনি। দেশের স্বল্প শিক্ষিত বেকার তরুণরা কোয়েল পালনকে পেশা হিসেবে বেছে নিলে নিজে যেমন স্বাবলম্বি হওয়ার সুযোগ রয়েছে। তেমনি আত্মসামাজিক অবস্থার উন্নয়নে ভূমিকা রাখার সুযোগ রয়েছে। কোয়েল পালনকে পেশা হিসেবে বেছে নিতে কি প্রয়োজন তার বিরুপ দেয়া হলো:
শুরু করবেন কিভাবে? বিস্তারিত.....

কোয়েল পালন ও চিকিৎসা সর্ম্পকিত প্রাধমিক ধারনা: 

ভুমিকা
কোয়েল পালনের বিভিন্ন সুবিধা সমূহ 
কোয়েলের জাত বা বংশ
কোয়েলের থাকার জায়গা বা বাসস্থান
কোয়েলের খাদ্য বা খাবার ব্যবস্থা 
কোয়েলের স্বাস্থ্য রক্ষা
পুনরুৎপাদন  
ডিমের রং, আকার ও আকৃতি
কোয়েলের বাচ্চা ফোটানো
কোয়েলের বাচ্চার ব্রুডিং ব্যবস্থাপনা এবং যত্ন
খাবার পাত্রপানির পাত্র
আলোক ব্যবস্থাপনা
পুষ্টি 
রোগ বালাই

ছিলেন ফেরিওয়ালা হলেন রপ্তানিকারক

চলছে সবজি কাটা, বাছাই। শ্রমিকদের সঙ্গে হাত লাগিয়েছেন অহিদুল আলম
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কর্নেলহাট বাজারের পাশ ঘেঁষে চলে গেছে একটি সরু গলি। এর একেবারে শেষ মাথায় একটি ঘরে বড় একটি চৌবাচ্চায় সাজিয়ে রাখা হয়েছে ধবধবে সাদা কচুর ছড়া। ছড়ার চামড়া ছাড়ানোর কাজে ব্যস্ত একদল নারী। মাটিতে বসে কোটাকুটি করছেন। পাশাপাশি কয়েকজন তরুণ এগুলো বস্তা থেকে বের করে এক জায়গায় জড়ো করে রাখছেন।
এটি অহিদুল আলমের সবজির আড়ত। এই আড়ত থেকে কাটাছাঁটা সবজিগুলো চলে যাচ্ছে দেশের বাইরে।
একেবারে শূন্য থেকে শুরু করে অহিদুল গড়ে তুলেছেন এই আড়ত। একসময় ফেরি করে সবজি বিক্রি করতেন তিনি। নিজের চেষ্টা, পরিশ্রম ও বুদ্ধিতে আজ তিনি একজন রপ্তানিকারক।
যেভাবে শুরু: দারিদ্র্যের কারণে স্কুলে পড়ার সুযোগ পাননি অহিদুল। খুব ছোটবেলা থেকেই তাঁকে রোজগারে নামতে হয়। দেশ স্বাধীনের পর একসময় নিজেই মাথায় করে সবজি বিক্রি করতেন। ১৯৭৮ সালের দিকে তিনি কর্নেলহাট তরকারির বাজারে আরেকজনের দোকানের সামনে বসার জায়গা করে নেন।
সুযোগটা কাজে লাগানোর চেষ্টা করেন অহিদুল। ঠিক সময়ে দোকান খুলতেন। আর যতক্ষণ বাজারে ক্রেতা থাকত, ততক্ষণ পর্যন্ত খোলা থাকত তাঁর দোকান। ধীরে ধীরে ব্যবসার উন্নতি হতে থাকে।
এরপর নিজেই একটি দোকানের মালিক বনে যান। অহিদুলের দোকান থেকে নিয়মিত সবজি নিয়ে যাওয়া হতো গ্ল্যাক্সো বাংলাদেশ লিমিটেডের কর্মচারী ক্যানটিনের জন্য।
এভাবে একসময় গ্ল্যাক্সোর কর্মচারীদের কাছ থেকে বিদেশে সবজি পাঠানোর ধারণা পান অহিদুল। ১৯৯০ সালে তিনি প্রথম দুবাইয়ে সবজি পাঠাতে শুরু করেন। ১৯৯৫ সালে তিনি পাহাড়তলীর কর্নেলহাট এলাকায় ‘গাউছে ভান্ডার স্টোর’ নামে একটি আড়ত প্রতিষ্ঠা করেন। এখানেই বিভিন্ন স্থান থেকে আনা সবজি সংরক্ষণ, কাটা, ধোয়ামোছার কাজ চলতে থাকে।
কারা কাজ করছেন: অহিদুলের আড়তে গিয়ে দেখা যায়, চারপাশে গোল হয়ে বসে কাজ করছেন নারীরা। আমেনা বেগম নয় বছর ধরে এখানে সবজি কাটার কাজ করছেন। কেমন আছেন জানতে চাইলে পান চিবোতে চিবোতে কুমিল্লার আঞ্চলিক ভাষায় বললেন, ‘স্বামী-পোলাপাইন লইয়া আল্লাহর রহমতে ভালাই আছি। সাড়ে চার হাজার টাকা ঘরভাড়া দিয়া থাকি।’
আংকারা বেগম প্রায় নয় বছর ধরে এই কাজের সঙ্গে জড়িত। স্বামী, পাঁচ ছেলেসহ থাকেন কর্নেলহাট এলাকায়। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত আড়তে কাজ করেন। বেতন পান সাপ্তাহিক ভিত্তিতে।
অহিদুল জানান, প্রায় দেড় হাজার নারী তাঁর আড়তে কাজ করেন। প্রতি কেজি সবজি কাটা বাবদ তাঁরা একেকজন পাঁচ টাকা করে পান।
সবজি সংগ্রহ ও রপ্তানি: যেসব রপ্তানি করা হয়, তার মধ্যে রয়েছে: ঝিঙে, চিচিঙা, করলা, কাঁকরোল, বরবটি, পটোল, ঢ্যাঁড়স, কচুর লতি, পাইন্যা কচু, কচুর ছড়া, লালশাক, পুঁইশাক, লাউশাক, কাঁঠালের বিচি, জলপাই, কালো জাম, টক বরই প্রভৃতি।
নরসিংদী, গাইবান্ধা, লালমনিরহাট, যশোর, বগুড়া, মেহেরপুর, কুমিল্লা, খাগড়াছড়ি থেকে ভালো মানের সবজি সংগ্রহ করে আনা হয় ট্রাকে করে। এসব সবজি যায় যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ইতালি, ফ্রান্স, সিঙ্গাপুর, জার্মানি, কানাডা প্রভৃতি দেশে।
অহিদুল সিমার্ক ফিশারিজ ও কোস্টার শিপ নামে দুটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ইউরোপে সবজি রপ্তানি করেন। তাঁর আড়তে সবজি কাটা ও ধোয়ামোছার পর সরাসরি পাঠিয়ে দেওয়া হয় এই দুটি প্রতিষ্ঠানের প্রসেসিং প্ল্যান্টে। সেখানে সবজি প্যাকেটজাত করে হিমাগারে রেখে দেওয়া হয়। এরপর বিদেশ থেকে অর্ডার পাওয়ার পর সেগুলো জাহাজীকরণ (শিপমেন্ট) করা হয়।
আয়ের পরিমাণ: প্রতি মাসে সবজি রপ্তানি করে গড়ে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকার মতো আয় হয় অহিদুলের। তবে নিজে সরাসরি রপ্তানি করতে পারলে আরও ভালো আয় হতো। অহিদুলের সহযোগী শাহ আলম বলেন, ‘নিজেরা সরাসরি পাঠাতে হলে অনেক টাকার দরকার। কিন্তু আমাদের কাছে তো এত টাকা নেই।’
অহিদুলের পরিবার: একেবারেই সাদাসিধে গোছের মানুষ অহিদুল (৫০)। স্ত্রী ও দুই ছেলেমেয়ে নিয়ে তাঁর সংসার। থাকেন কর্নেলহাটের পণ্ডিতবাড়ী এলাকায়। তিল তিল করে জমানো টাকায় বানিয়েছেন তিনতলা বাড়ি। স্ত্রী গৃহিণী। ছেলে পাভেল চৌধুরী এ বছর উচ্চমাধ্যমিক পাস করেছেন কাট্টলী মোস্তফা হাকিম কলেজ থেকে। মেয়ে তানজুমান আরা বেগম পড়ে কাট্টলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীতে।
অহিদুলের জীবনসংগ্রামের শুরুতে তাঁর স্ত্রীই ছিলেন একমাত্র প্রেরণা। আর্থিক অসচ্ছলতার মধ্যেও এতটুকু ভেঙে পড়েননি। আগলে রেখেছেন ঘরসংসার। অভয় দিয়েছেন স্বামীকে। তাই তো অহিদুল সুদিনের স্বপ্ন দেখতে পেয়েছিলেন।
আরও অনেকে: এলাকায় দেশীয় সবজি, ফলফলারি বিদেশে পাঠানোর প্রথম নজির গড়েন অহিদুল। বর্তমানে তাঁর পথ ধরে হাঁটতে শুরু করেছেন হালিশহর, উত্তর কাট্টলী ও দক্ষিণ কাট্টলী এলাকার কিছু ব্যবসায়ী।
স্থানীয় বাসিন্দা, একসময়কার সৌদি-প্রবাসী মোহাম্মদ শামীম বলেন, ‘এই এলাকায় অহিদুল চাচাই প্রথম বিদেশে সবজি রপ্তানি শুরু করেছেন।’ এর আগে এমন চিন্তা কারও মাথায়ই আসেনি।’
অহিদুলের স্বপ্ন: অহিদুল আলম বলেন, ‘আমি সম্পূর্ণ নিজ চেষ্টায় এত দূর এসেছি। কোনো ব্যাংক অথবা কারও কাছ থেকে কোনো আর্থিক সহযোগিতা নেইনি। নিজের ব্যবসার পাশাপাশি কিছু মানুষকে মোটামুটিভাবে চলার সুযোগ করে দিতে পারছি, এটাই আমার সান্ব্তনা। তবে আরও আর্থিক সহযোগিতা পেলে ভালো হতো। তাহলে ব্যবসার পরিধি বাড়াতে পারতাম। এতে অনেক বেশি মানুষের কাজের সুযোগ করে দেওয়া যেত।’
অহিদুলের আগামী দিনের স্বপ্নগুলো সফল হবে—এই আশা তো করাই যায়।
 
 
Home, About, Contuct,
Copyright © Careers BD